চলুন সিল্ক সম্পর্কে বিশদভাবে জেনে নেয়া যাক!

 সৌখিনতা আজকের দিনের একটি প্রচলিত শব্দ। ঠিক তেমনি সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব **৩,৫০০ **আগে থেকেই চীনারা শব্দটিকে পরিধানের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবেই জড়িয়ে নিয়েছিলো। 



সৌখিনতাকে যদি বস্ত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে বলা হয়, তবে প্রথমেই **"সিল্ক"** শব্দটি মাথায় ঘুরপাক খায়।


# **চলুন সিল্ক সম্পর্কে বিশদভাবে জেনে নেয়া যাক!**


**সিল্ক মূলত কি? **


সিল্ক বা রেশম এক ধরনের প্রাকৃতিক প্রোটিন তন্তু, যার কয়েকটি ধরন সরাসরি টেক্সটাইল খাতে ব্যবহার করা হয়। এতে সাধারণত দু' ধরনের প্রোটিন লক্ষণীয়, যথা: সেরিসিন এবং ফাইব্রইন। 


**সিল্ক কোথা হতে সংগ্রহ করা হয়?**


রেশম বা সিল্কের সর্বাধিক পরিচিত ধরনটি 'বোম্বিক্স মোরি' নামের রেশম পোকার লার্ভার গুটি থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি 'ইনসেক্টা' শ্রেণির 'বম্বেসিডাই' পরিবারের অধিভুক্ত। সেরিকালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে সিল্ক বা রেশম সুতা উৎপাদনের প্রাথমিক ধাপটি সম্পন্ন হয়। 



**রেশম চাষ কিভাবে করা হয়ে থাকে? **


রেশম পোকার লার্ভাকে তুঁত পাতা খাওয়ানো হয় এবং চতুর্থ মোল্টের পরে তারা তাদের কাছে রাখা একটি ডাল বেয়ে উপরে উঠে এবং তাদের রেশমি কোকুনগুলো ঘোরায়। তারপর কোকুন ফুটন্ত জল দিয়ে চিকিৎসা করা হয় এবং সূক্ষ্মভাবে মুক্ত করা হয়। প্রায় ১০ কেজি কোকুন থেকে ১ কেজি রেশম বা সিল্ক উৎপাদিত হয়।


**সিল্ক বা রেশমের সাথে বিশ্ববাসীর পরিচয় হয় কবে?**


সর্বপ্রথম চীনে রেশমগুটির চাষ করা হয়। সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ আগে থেকেই চীনারা এর ব্যবহার জানতো এবং সেকালের চীনা সম্রাট এবং ধীরে ধীরে ধনীগোষ্ঠীতে সিল্ক বা রেশম বেশ সমাদৃত হতে থাকে। অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পর রেশম গুটির চাষ জাপান, কোরিয়া এবং ভারতে শুরু হতে থাকে। তবে রেশম বাণিজ্যের প্রথম প্রমাণ মেলে মিশরের ২১তম রাজবংশের একটি মমির চুলে পাওয়া রেশম থেকে। ১২০০ খ্রিষ্টাব্দে ইতালির পালেরমো, কাতানযারো এবং কোমো ছিলো ইউরোপের সর্বাধিক রেশম উৎপাদন শহর।


**রেশম বা সিল্ক কতো প্রকার হয়ে থাকে? **


বিশ্বজুড়ে চার ধরনের প্রাকৃতিক রেশম উৎপাদিত হয়। যথা: 


১. মালবেরি সিল্ক


২. ইরি সিল্ক


৩. তসর সিল্ক


৪. মুগা সিল্ক


**রঙের কেমন তারতম্য হয়ে থাকে? **


সিল্ক বা রেশম হরেক রঙের হতে পারে। যেমন: সাদা, হলুদ, হলদেটে, সবুজ এবং সোনালি-হলুদ।


**মূল্যবান পোষাক তৈরিতে সিল্ক সুতার কদর করা হয় কেন?**


সিল্ক বা রেশম একটি প্রাকৃতিক ফিলামেন্ট ফাইবার। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক মসৃণতা। বেশ স্থিতিস্থাপক, নমনীয়, তুলনামূলক শক্তিশালী (ইস্পাতের তুলনীয় সুতার মতো), সম্প্রসারণশীল, চাকচিক্যপূর্ণ, গুণাগুণ সম্পন্ন এবং শতকরা ১১ ভাগ আর্দ্রতা ধারণ সম্পন্ন হওয়ার কারণে এই সিল্ক বা রেশমকে বিশ্বব্যাপী সমাদর করা হয়ে থাকে। 


**সিল্কের বিবিধ ব্যবহার: **ফ্যাশন্যাবল ক্লথ, ড্রেস, ব্লাউজ, স্কার্ফ, গ্লাভস, টাই, হ্যাট, ওয়াল কভারিংস ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিল্কের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষণীয়। সিল্ক ক্রোশেটের জন্য ও দুর্দান্ত হতে পারে।


# **সিল্ককে একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে দেখা সময়ের দাবিমাত্র। বোম্বিক্স মোরি এর যথাযথ চাষাবাদের মাধ্যমে আজ হোক বা কাল বিশ্বব্যাপী সিল্কের চাহিদা থাকবে তুঙ্গে।


writer:

Labiba Salwa Islam

12th batch

Department of Textile Engineering -NITER

Comments

Popular posts from this blog

গার্মেন্টস প্রডাক্ট এর কোয়ালিটি চেনার বোঝার কিছু উপায়

ফাইবার এবং টেক্সটাইল ফাইবারের পার্থক্য, ফাইবার কি, ফাইবার প্রকারভেদ

Home Textile | Technical Textile |Types,uses,importance of Home textile